নতুন যাদের মোবাইলে ভিডিও নেয়ার শখ

person holding phone

এই আলোচনা তাদের জন্য যারা এখানে ওখানে ঘুরতে যায়, মোবাইলে ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করতে চায়। যারা ইতোমধ্যে এই স্টেপ পার করে এসেছেন তারা এড়িয়ে যান। 

১. লজ্জা ঝেড়ে ফেলা : প্রথমেই হচ্ছে মনে মনে প্রস্তুতি নেয়া। আপনি ভিডিও করবেন এই প্রস্তুতি নিবেন। লজ্জা শরম এক পাশে রেখে দিন। আপনি আপনার কাজ করতেছেন, অপরাধ না। সো কাজ করতে কিসের লজ্জা। ‘মানুষের কাজ নেই তাই তারা তাকিয়ে থাকবে, এই তাকিয়ে থাকা আমাদের ঐতিহ্য’! 

২. আপনার যন্ত্রকে চিনুন : আপনি যে মোবাইল ক্যামেরা, বা অন্য কোন ক্যামেরা ব্যবহার করেন সেটাকে ভালো করে জানুন। মডেল নাম্বার দিয়ে ইউটিউব করুন, গুগল করুন। এই সেম মডেলের যন্ত্র দিয়ে কে কি করতেছে সেটা জানতে পারবেন। একজন ড্রাইভারের জন্য গাড়ি সম্পর্কে জানা যেমন জরুরী তেমনই জরুরী কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের গ্যাজেট সম্পর্কে আইডিয়া থাকা। 

৩. নিশ্বাস নিন, স্থির হোন : তাড়াহুড়া করার কিছু নেই। স্থির হোন। আপনি ইতোমধ্যে জানেন আপনি কি করতে চাচ্ছেন। আপনি কাজ করবেন, আপনি আপনার যন্ত্রপাতি সম্পর্কে জানেন। কিসের ভিডিও করবেন সেটা মোটামুটি ভেবে এসেছেন। সো রিলাক্স। যেহেতু আপনি ফ্রিল্যান্সার, এই মুহুর্তে আপনার উপরে কারো প্রেশার নেই সেহেতু ধীরেসুস্থে আগান। 

৪. রিসার্চ করুন আগের রাতে :  যেহেতু আপনি  এই লাইনে নতুন সেহেতু আগে একটু দেখুন এই কাজ আগে কেউ করেছে কিনা। করলে কিভাবে করেছে। আপনি জাস্ট সেভাবে করুন। অনুপ্রেরণা নিয়ে কাজ করা ভালো। মনে মনে বা কাগজে নোট ডাউন করতে পারেন। ধরুন আপনি একটি মেলায় যাচ্ছেন। সেখানে কি কি হয়, বা হতে পারে সেটার একটা ম্যাপ আঁকুন মনে মনে। 

মেলা হলে :  মানুষ ঢুকবে, কেনাকাটা করবে, কেউ নিজের প্রোডাক্ট ডিসপ্লে করবে, খাবারের আইটেম হলে মাছি তাড়াবে ইত্যাদি! আপনি ওয়ান বাই ওয়ান ক্লিপ নিতে থাকবেন। একইভাবে সমুদ্রে যাবেন সেখানে কি কি হয় সেগুলো ভেবে নিবেন। এতে করে আপনার কাজ গোছানো হবে। 

৫. ভিডিও নেয়া শুরু করুন : যদি ভিডিও ইউটিউব ও ফেসবুকের রেগুলার ভিডিওর জন্য নিতে চান তবে মোবাইলকে হরিজেন্টাল রাখুন। আর যদি টিকটক, ইন্সটাগ্রাম, ইউটিউব শর্টস বা ফেসবুক রিলসের জন্য নেন তাহলে ভার্টিকেল ভিডিও নিন।

একই সাথে আগেই জেনে নিন বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার অরিয়েন্টেশন। 

ইমেজ ক্রেডিট

ভিডিও নেয়ার সময় : 

– অযথা মোবাইল নাড়াচাড়া করবেন না। 

– খুব প্রয়োজনে ডান থেকে বামে, বাম থেকে ডানে, উপর থেকে নিচে, নিচে থেকে উপরে মোবাইল ঘুরান হালকা হাতে। 

– যেহেতু আপনি একদম নতুন ধরেই নিচ্ছি আপনার কোন গিম্বাল নেই। সেক্ষেত্রে নিজের সামর্থ্যে সর্বোচ্চ স্টাবিলাইজ থাকার চেষ্টা করুন। 

– আপনি যদি আইফোন ইউজার হন তবে এক্ষেত্রে একটু সুবিধা পাবেন কিছু এন্ড্রয়েডের মধ্যে ভরসা করার মতো কিছু আমি এখনো পাইনি। আর পেলে যেই দামে ফোন নিবেন সেটা দিয়ে আইফোন নিতে পারবেন। 

– অলস হবেন না। জায়গায় দাঁড়িয়ে মোবাইল ক্যামেরায় জুম করার চেষ্টা করবেন না একদম। ভালো ফুটেজ চাইলে সাবজেক্টের কাছে যান। আর আপনি অবশ্যই সুন্দরবনের বাঘের ভিডিও নিচ্ছেন না। 

– যেকোন সাবজেক্টের ভিন্ন ভিন্ন এঙ্গেল থেকে ভিডিও নেয়ার চেষ্টা করুন। কোন না কোন এঙ্গেল ভালো আসবে। 

– দায়সারা ভাবে ভিডিও করবেন না। 

– প্রয়োজন না থাকলে কোন ক্লিপ ১৫ সেকেন্ডের বেশি নিবেন না। পরে এডিট করার সময় বিপদে পড়বেন। ১৫ সেকেন্ড নিয়ে আগে পরে ৩-৪ সেকেন্ড করে ফেলে দিবেন। (এখন আবার ইন্টার্ভিউ নিতে গিয়ে এই কাজ করিয়েন না) 

– আবারো বলছি মোবাইল ধরে রাখুন, খুব প্রয়োজন না হলে ডান বাম করবেন না। শেকি ভিডিও দেখতে ভালো লাগেনা। যদি ইমার্জেন্সি কোন ঘটনা ধরতে চান সেটা অন্য হিসাব। 

– আলোর বিপরীতে সাবজেক্ট রাখার চেষ্টা করবেন। আর রাতের বেলা ভিডিও করতে যাবেন না। 

– বাইকের পেছনে বসে, বাসের জানালায় মোবাইল তাক করার চেষ্টা এড়িয়ে চলুন। এতে ক্ষতির চাইতে লাভ হবার সম্ভাবনা বেশি। 

– কোন ফুটেজ ভালো হয়নি বলে মনে হলে আবার নিন। 

ভিডিও নেয়ার  পর : 

– এডিটের জন্য বিনামূল্যে অনেক ভালো এপস বাজারে আছে। সেগুলোর ব্যবহার শিখে নিন। 

– মিউজিক কপিরাইটের ব্যাপারে সচেতন থাকুন। 

– ইন্সটাগ্রাম বা টিকটকে  একটিভ থাকুন ট্রেন্ড বুঝার জন্য। (যে যার লেভেলে যাবেন আরকি) 

সোশ্যাল মিডিয়াতে : 

অনেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে এর ওর ভিডিও ডাউনলোড করে আপলোড করেন। ভাবেন যে আগে একটু ফলোয়ার গেইন করে নেই পরে নিজে শুট করবো। এই কাজটা ভুলে করবেন না। ৯০% নিজের কাজ আপলোড করলেন আর ১০% মানুষের টা নিলেন তাতেও দেখবেন আপনার আইডি রেস্ট্রিকশন খেয়ে বসে আছে! রিসেন্টলি অনেকের অর্জিনাল কাজের উপরে  রেস্ট্রিকশন দিয়েছে ফেসবুকে। আগে ভিডিও করা শিখেন পরে আপলোড করা শিখতে পারবেন। 

মনে রাখবেন : শেখার সময় শুধু শিখবেন। তখন টাকা কামানোর চিন্তা মাথায় নিলে শুধু ২ নাম্বারিই শিখবেন! 

Leave a Reply

Your email address will not be published.